December 22, 2024, 8:52 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশকে সন্ত্রাসীদের তথ্য দিয়ে সেই সন্ত্রাসীদের আক্রমণে গুরুতার আহত হয়েছেন কুষ্টিয়ার এক যুবক। অভিযোগ উঠেছে তথ্য পেয়ে পুলিশই ঐ সন্ত্রাসীদের কাছে তথ্য প্রদানকারীর নাম জানিয়ে দেয়। এ বিষয়ে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
ঘটনা ঘটেছে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার জুনিয়াদাহ এলাকার ফয়জুল্লাপুর গ্রামে গত শুক্রবার।
কুষ্টিয়া পুলিশ সুপারের কাছে করা একটি লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে আসাদুল হক নামের এক যুবক শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে জুনিয়াদহ এলাকায় তার বাড়ির পাশে পদ্মা নদীতে তিনটি গুলির শব্দ পান। তিনি বিষয়টি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে জানান। ঐ সেবা থেকে তার সঙ্গে ভেড়ামারা থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তার (ডিউটি অফিসার) সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলটি ছিল ভেড়ামারা থানার কুচিয়ামোড়া পুলিশ ক্যাম্পের আওতায়। তাই ভেড়ামারা থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা ভুক্তভোগী যুবকের নাম ও মুঠোফোন নম্বর কুচিয়ামোড়া পুলিশ ক্যাম্পে উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর হোসেনকে দেন।
আসাদুল হক, একই এলাকার মৃত আবু বক্করের ছেলে।
তিনি অভিযোগে উল্লেক করেছেন, এর ঘন্টা তিনেক পর, বেলা ১টার দিকে এসআই জাহাঙ্গীর হোসেন তাকে ফোন দেন এবং বলেন ‘তুই ফাজলামি করিস, আমি খবর নিয়ে দেখেছি এলাকায় কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
যুবকটি জানান এর ২০/২৫ মিনিটের মধ্যে ৮ জন যুবক তার বাসায় প্রবেশ করে তাকে গালাগালি করে। এদের মধ্যে ৪ জন তাকে আক্রমণ করে। ১ জন রামদা দিয়ে তাকে এলোপাথারী কোপায়। সন্ত্রাসীরা তাকে বলেছিল তোর এতবড় সাহস তুই পুলিশকে খবর দিস। আসাদুলের চিৎকার শুনে পাশেই মাঠে কাজ করা কয়েকজন কৃষক ঘটনাস্থলে ছুটে আসে এবং তাকে উদ্ধার করে। দুর্বৃত্তরা তাকে পিস্তল দিয়ে ভয় দেখিয়ে পালিয়ে যায়।
তার অভিযোগে যুবকটি ৭ জনের নাম উল্লেখ করেছে। এরা হলো আলমগীর, মামুন, মিলন, শাকিল, রুবেল, আসমান, রাকিব ও অজ্ঞাত নাম একজন। এদের সবার বাড়ি ভেড়ামারা ও দৌলতপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।
আসাদুল জানান তিনি প্রথমে ভেরামারা উপজেলা স্বাস্থ্য ভবনে চিকিৎসা নিতে যান। সেখানে নিরাপদ বোধ না করায় ভর্তি হন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসা শেষে শনিবার বিকেলে ছাড়পত্র নেন। বর্তমানে তিনি তার বাড়িতে আছেন।
রবিবার সকালে তার সাথে কথা হলে তিনি জানান তার সাথে পুলিশের উর্ধ্বতন কয়েকজন কর্তাব্যক্তি কখা বলেছেন। তারা বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছেন।
যোগাযোগ করা হয় অভিযুক্ত এসআই জাহাঙ্গীর হোসেনের সাথে তিনি কোন পত্রিকার সাংবাদিক জানতে চান। দ্য ডেইলী স্টার শুনেই পোন কেটে দেন। যতবার ফোন করা হয় ততোবারই কেটে দেন। পরে নাম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজালাল ঘটনাস্থল থেকেই জানান তিনি রবিবার সকালেই আসাদুলের করা অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহন করেছেন। ওসি জানান এখানে ভেড়ামারা, দৌলতপুর ও নাটোরের লালপুরের তিনটি গ্রæপ পদ্মার বালির দখলদারিত্ব নিয়ে বিবাদে লিপ্ত। তিনি জানান তার থানার অংশে যতটুকু পড়েছে তা তিনি খতিয়ে দেখছেন।
এসআই জাহাঙ্গীর হোসেনের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি জানান এটি উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের বিষয়।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার খায়রুল আলম জানান অভিযোগটি আমলে আনা হয়েছে। ভেড়ামারা থানায় এ বিষয়ে মামলা রের্কড করা হয়েছে। পুরিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকতার বক্তব্য ডিজিটালি পরীক্ষা করা হচ্ছে।
Leave a Reply